দখিনের খবর ডেস্ক ॥ সরকার ভোজ্যতেলের মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়ার পরও দাম কমেনি। কমেনি চালের দামও। বরং সরু বা চিকন চালের দাম খানিকটা বেড়েছে। দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে ব্রয়লার মুরগি। তবে কমেছে পেঁয়াজ ও রসুনের দাম। রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, চিকন সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে। সয়াবিন তেলের দামও গত সপ্তাহের চেয়ে বেড়েছে লিটারে ২ টাকা করে। শুধু তা-ই নয়, সরকার ভোজ্যতেলের মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়ার দু’দিন পার হয়ে গেলেও বাজারে এর কোনও প্রভাব দেখা যায়নি। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে ৫ টাকা। আর এক মাসে বেড়েছে ৩০ টাকা। মুরগি ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত এক মাসে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে অন্তত ৩০ টাকা। এক মাস আগে ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল ১২০ টাকা কেজি। বর্তমানে সেই মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ টাকা কেজিতে। সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবি’র হিসাবে, গত এক মাসে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ১১ শতাংশ। সোনালিকা জাতের মুরগির দাম উঠেছে কেজিপ্রতি ২৬০ টাকায়। ফার্মের মুরগির ডিমের দাম প্রতি ডজন ৯০ টাকা। গত সপ্তাহের তুলনায় বাজারে সরু বা চিকন চালের দাম কেজিতে বেড়েছে ১-২ টাকা। গত সপ্তাহে যে চাল ৬২ টাকা ছিল, গতকাল শুক্রবার সেই চাল বিক্রি হয় ৬৪ টাকা দরে। কাওরান বাজারের চাল ব্যবসায়ী আজিবর রহমান বলছেন, চালের দাম আগের মতোই স্থিতিশীল। তবে, সরবরাহ জনিত কারণে সরু বা চিকন চালের দাম গত সপ্তাহের চেয়ে কেজিতে ২ টাকা বেড়েছে। একইভাবে অব্যাহতভাবে বেড়েই চলেছে ভোজ্যতেলের দাম। তেল ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছে। গত এক মাস ধরে পণ্যটির দাম বেড়েই চলেছে। টিসিবি বলছে, গত এক বছরে সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে ৪০ শতাংশ। এরমধ্যে খোলা পাম অয়েলের দাম বেড়েছে ৪২ শতাংশ। আর খোলা সয়াবিনের দাম বেড়েছে ৩৫ শতাংশ। পাম অয়েল সুপারের দাম বেড়েছে ৩৭ শতাংশ। আর ৫ লিটার বোতলের সয়াবিনের দাম বেড়েছে ২৫ শতাংশ এবং এক লিটার বোতলের দাম বেড়েছে ২৮ শতাংশ। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ পাইকারি ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হাজী গোলাম মাওলা বলেন, বেশ কিছু দিন ভোজ্যতেলের দাম বাড়তি থাকলেও এখন ধীরে ধীরে কমে আসছে। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমার কারণে আমাদের পাইকারি বাজারেও সয়াবিন তেলের দাম কিছুটা কমতির দিকে। অবশ্য এখন তেলের সরবরাহ তুলনামূলক কম। এ কারণে দাম যেভাবে বেড়েছে সেভাবে কমছে না। এর আগে গত মঙ্গলবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য বিপণন ও পরিবেশ বিষয়ক জাতীয় কমিটির সভায় খুচরা বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের লিটারপ্রতি দাম ১৩৫ টাকা, খোলা সয়াবিন ১১৫ টাকা ও পাম সুপার ১০৪ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। বোতলজাত সয়াবিনের পাঁচ লিটারের এক বোতলের দাম ধরা হয় ৬৩০ টাকা। মিরপুরের বাসিন্দা শাহাবুল ইসলাম বলেন, গত বছরে যে সয়াবিনের দাম ছিল ১০০ টাকা লিটার, এখন সেই সয়াবিন কিনতে হচ্ছে ১৩৫ টাকায়। এক বছর আগে খোলা সয়াবিন ৮০-৮৫ টাকায় পাওয়া যেত, এখন সেই খোলা সয়াবিন ১১৫-১২০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। একইভাবে ৪৬৫ টাকায় যে ৫ লিটারের বোতল পাওয়া যেত এখন সেটি কিনতে হচ্ছে ৬৩০ টাকা। টিসিবি’র হিসাবে, খুচরা বাজারে খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটার এখন ১১৬-১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পাম অয়েল বিক্রি হয় ১০৫-১০৭ টাকা লিটার। অবশ্য পেঁয়াজের পাইকারি দাম গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিপ্রতি ৩-৫ টাকা কমেছে। খুচরা বাজারেও এর প্রভাব পড়েছে। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ এখন ২৬-৩২ টাকা। বাজারে আলু বিক্রি হচ্ছে ১৫-২০ টাকা। আর বেশিরভাগ শীতের সবজি আগের মতোই ২০-৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। অবশ্য বাজারে আসতে শুরু করা গ্রীষ্মের আগাম সবজির দাম চড়া। পটল ও ঢেঁড়সের দাম প্রতি কেজি ৮০-১০০ টাকা। এ ছাড়া লেবু ৫০-৬০ টাকা হালি, ফুলকপি ও ব্রকলি ২০ টাকা পিস, বাঁধাকপি ও লাউ ৩০ টাকা পিস হিসেবে বিক্রি হচ্ছে।
Leave a Reply